৩০ পেরোলেই নারী-পুরুষ নির্বিশেষে হাড় ক্ষইতে শুরু করে। ফলাফল? গায়ে-হাতে-পায়ে অসহ্য ব্যথা। চট করে হাড় ভেঙে যাওয়া। অস্টিও-আর্থারাইটিসের মতো বাতের সমস্যা। বুড়ো বয়সের এই ব্যথা-বেদনা এড়াতে চাইলে ছোটো থেকেই শিশুর হাড়ের সঠিক যত্ন নিতে হবে। শুধু কি বড়ো হয়ে সমস্যা হবে! বাড়ের সময় হাড় মজবুত না হলে বাচ্চার রিকেট হতে কতক্ষণ? হাড় যাতে সঠিক ভাবে বাড়ে, মজবুত হয় তার জন্য বাচ্চার খাদ্যতালিকায় রাখুন দুধ ও দুগ্ধজাত দ্রব্য। দুধের মধ্যে থাকা ক্যালসিয়াম হাড়ের ঘনত্ব বাড়ায়। শিশু দুধ খেতে না চাইলেও ওষুধের মতো করেই দুধ খাওয়ানো উচিত বলে মত চিকিৎসকদের। একান্তই তা না হলে পনির, দই, ছানা, মাখন এ সব রাখুন তার খাদ্যতালিকায়।
ক্যালসিয়াম কী?
- ক্যালসিয়াম এক ধরনের খনিজ পদার্থ। যা হাড়ের সঠিক বৃদ্ধি ও মজবুত গঠনে সাহায্য করে। পাশাপাশি স্নায়ু এবং পেশির কর্মক্ষমতাও বাড়ায়। দেখভাল করে হার্টেরও।
কোন বয়সে কতটা ক্যালসিয়াম?
- ৬ মাসের আগে পর্যন্ত একজন বাচ্চার রোজ ২০০ মিলিগ্রাম করে ভিটামিন সি-র প্রয়োজন যা সে ব্রেস্ট মিল্ক থেকে পায়।
- ৬ মাস থেকে ১১ মাস পর্যন্ত বাচ্চার হাড় মজবুত করার জন্য দরকার রোজ ২৬০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম।
-১-৩ বছরের বাচ্চার চাই ৭০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম।
- ৪-৮ বছরের বাচ্চার প্রয়োজন হাজার মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম।
- ৯ বছর বয়স থেকে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া পর্যন্ত রোজ ডায়েটে ১৩ হাজার মিলিগ্রাম ভিটামিন সি থাকা আবশ্যিক।
হাড় মজবুত থাকবে কোন খাবারে?
- কড়াইশুঁটির দানায় আছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম। যা বাচ্চার হাড়ের পুষ্টিতে বিশেষ সহায়ক। সাধারণত, শীতের সবজি এটি, তাই শীতের নানা খাবারেই রাখুন কড়াইশুঁটির ছোঁয়া।এই দিয়েই বানিয়ে দিন শিশুর প্রিয় কোনও স্ন্যাক্স। রোজের ভাতের মধ্যেও এই কড়াইশুঁটি যোগ করে আনতে পারেন খাবারের নতুন স্বাদ।
- পিনাট বাটার খেতে ভালবাসে খুদে? তা হলে তাকে আমন্ড বাটারে অভ্যস্ত করে তুলুন। আমন্ডের মধ্যে রয়েছে প্রচুর ক্যালসিয়াম। এক-তৃতীয়াংশ কাপ আমন্ডে প্রায় ২৬৪ মিলিগ্রাম মতো ক্যালসিয়াম মেলে। সন্তানকে দুধের সঙ্গেও দিন কয়েক টুকরো আমন্ড, খেতে ভাল বলে শিশুরা এই খাবার বেশ পছন্দও করে।
- সামুদ্রিক মাছ, বিশেষ করে স্যামন, টুনা এ সব মাছে প্রচুর ক্যালসিয়াম আছে। শিশুর হাড়ের বৃদ্ধির দিকে বিশেষ নজর দিতে হলে তার খাদ্যতালিকায় অবশ্যই রাখুন এ সব মাছ। এ সব মাছ দিয়ে নানা পছন্দসই স্যান্ডউইচ ও স্ন্যাক্স বানিয়েও দিতে পারেন তাকে।
- অনেক শিশুই মাছ পছন্দ করে না। অথচ সামুদ্রিক মাছের ক্যলসিয়াম তার বড় প্রয়োজন। এমন হলে সেই ঘাটতি ঢাকতে ডিম দিন শিশুকে রোজ। ব্রেকফাস্ট ছাড়াও দিনের যে কোনও সময়ই ডিম দিতে পারেন তাকে। একটি সিদ্ধ ডিমে ৫০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে।
- অনেক শিশু নিরামিষ পছন্দ করে, মাছ-ডিমে তাদের আগ্রহ নেই। তাদের জন্য রোজ খাদ্যতালিকায় রাখুন এক গ্লাস লেবুর রস। অস্থিবিদদের মতে, ১৫০ গ্রাম কমলালেবু বা মুসাম্বির রসে ৬০ মিলিগ্রাম মতো ক্যালসিয়াম থাকে। তাই শিশুর ব্রেকফাস্টে রাখুন এক গ্লাস লেবুর রস।
No comments:
Post a Comment