সুতরাং আপনিও চাইলে আমদানি রপ্তানি লাইসেন্স IRC করার পরে নিজে ভারতে গিয়ে মটরসাইকেল আমদানি করতে পারবেন। উল্লেখ্য কলকাতা থেকে বেনাপোল/পেট্রাপোল কাস্টমস এর দুরত্ব মাত্র ৮৭ কিঃমিঃ। আর বেনাপোল থেকে ঢাকার দূরত্ব ২৭০ কিঃমিঃ এর মত। এক্ষেত্রে ট্রান্সপোর্ট খরচ ও অনেক কম।
ভারত ও বাংলাদেশ সরকার ল্যান্ড কাস্টমস এর মাধ্যমে মটরসাইকেল আমদানিরপ্তানি বানিজ্যকে অনুমোদন দিয়েছে। সে ক্ষেত্রে ভারত থেকে যশোর এর বেনাপোল কাস্টমস এর মাধ্যমে সরকপথে মোটরসাইকেল আমদানি করা যাবে। মটরসাইকেল আমদানিজনিত কার্যাধি অনেকের কাছেই অনেক কঠিন বলে মনে হয়। জানা থাকলে কিন্ত এটা সাধারন একটা ব্যাপার।
পুরাতন মোটরসাইকেল আমদানিতে সিসি সীমা বৃদ্ধি করে নতুন আদেশ জারি করা হয়েছে। নতুন নিয়মে তিন বছরের অধিক পুরনো এবং ১৬৫ সিসির ঊর্ধ্বে সকল প্রকার মোটরসাইকেল আমদানি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এর আগের আদেশে ১৫৫ সিসির ঊর্ধ্বে সব মোটরসাইকেল আমদানি নিষিদ্ধ ছিল। তবে সর্বোচ্ছ তিন বছরের পুরাতন মোটর সাইকেল আমদানি করতে পারবেন।
এই তিন বছর প্রমানের জন্য PSIC (Pre-shipment Inspection Certificate) লাগবে। এটা এজন্য যে আপনার গাড়িটি কত বছরের পুরাতন সেটা জানতে। এতক্ষণে আপনাদের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে মোটর বাইক মনে হয় বেনাপোলে নিয়ে আসলেই হবে। এর পর কিছু ট্যাক্স দিলেই কাজ শেষ। এভাবে না। একটা মোটর সাইকেল আমদানি করতে আপনাকে নিচের ধাপ গুলি অনুসরণ করতে হবে
১। প্রথমে সেলারের সাথে দর দাম ঠিক করে একটা পি আই নিয়ে আসতে হবে। ২। এই পি আই দিয়ে আপনাকে ব্যাংক থেকে LC করতে হবে। সহজ ভাষায় LC কি ?? LC করার সহজ নিয়ম এখান থেকে বিস্তারিত দেখে নিতে পারেন। ৩। ব্যাংকে এল সি ওপেন করার পর সেলার আপনাকে পণ্য পাঠাবে। সেটা বেনাপোল বা যে কোন বন্দর দিয়ে পাঠাতে পারে।
৪। এবার আমদানি করার সকল কাগজ পত্র ব্যাংকে থেকে নিয়ে কোন সি এন্ড এফ কে দিতে হবে। ওরাই আপনার হয়ে সকল কাজ সম্পন্ন করে মোটরসাইকেল আপনাকে বুঝিয়ে দিবে। ৫। বাংলাদেশে আসার পর তা BRTC থেকে পরিক্ষা করিয়ে নিতে হবে। ৬। ১৫১% ডিউটি বা ট্যাক্স দিতে হবে। ৭। ১% রেফারেন্স ভেলু ট্যাক্স দিতে হবে
কত ট্যাক্স আসতে পারে? উল্লেখ্য যে বিগত বছর গুলোর তুলনায় চলতি অর্থ বছরে ২০১৬-১৭ ফোর স্ট্রোক এর ৫০ সিসি থেকে অনধিক ২৫০ সিসি ক্ষমতাযুক্ত মোটরসাইকেল এর আমদানিশুল্ক অনেকটা কমিয়ে আনা হয়েছে। ফোর স্ট্রোক এর ৫০ সিসি থেকে অনধিক ২৫০ সিসি ক্ষমতাযুক্ত মোটরসাইকেল এর সর্বমোট আমদানিশুল্ক ধার্য করা হয়েছে শতকরা ১৫১%।
যদি ও পুলিশ ছাড়া ১৫৫ সিসি এর অধিক ক্ষমতাযুক্ত মটরসাইকেল ব্যবহার করার অনুমতি নেই। তবে ক্ষেত্র বিশেষে ১৫০ সিসি এর অধিক ক্ষমতাযুক্ত মটরসাইকেল এর অনুমতি দেয়া হয়ে থাকে নিলাম আর বিশেষ অনুমতি ক্রমে। অর্থাৎ ১৫২% মোট ট্যাক্স আসবে। মূল দামের উপর। তাহলে একটা মোটর সাইকেল আমদানি করতে খরচ কত লাগবে ?? ধরুন আপনি ভারত একটি R15 v3 আনবেন।
এর দাম ইন্ডিয়ান এক লাখ ২৫ হাজার রুপির মত , বাংলা টাকায় এক লাখ ৭৫ হাজার টাকার মত হবে। এবার মূল আলোচনায় আসি বাইকের দাম ১,৭৫০০০ টাকা ১৫২% ট্যাক্স ২৭০০০০ টাকা এল সি খরচ ২০০০০ টাকা ট্রান্সপোর্ট ৫০০০ টাক সি এন্ড এফ খরচ ২০০০০ টাকা BRTA এবং অন্যান্য খরচ মিলিয়ে ২০০০০ টাকা। ৫১০০০০ টাকা
বাংলাদেশে দাম হলো ৫২৫০০০ টাকা । আপনি যদি বেশি পরিমাণে আমদানি করেন তবে এই খরচ আরও কমে আসবে। যাহোক এবার আসি আপনাদের মনের ঘুরপাক দূর করতে। তাহলে কিভাবে বিভিন্ন কোম্পানি লাভ করে। তবে কোন উৎপাদন কারী কোম্পানি ১৫২% ট্যাক্স দেয় না। তারা CKD (Completely Knocked Down) পণ্য নিয়ে আসে।
অর্থাৎ তারা সকল পার্টস গুলি খুলে নিয়ে আসে। এজন্য সরকার তাদের ইন্ডাস্ট্রিয়াল সুবিধা দেয়। আর আপনার টা CBU (Completely Built Up) । কাজেই আপনি এই সুবিধা পাবেন না। এজন্য তারা আপনার চেয়ে কমে আমদানি করতে পারেন এবং লাভ অনেক বেশি করতে পারেন।
মনে রাখবেন আপনি আমদানি করলে সব দায় দায়িত্ব কিন্তু আপনারই থেকে যাবে। নষ্ট হলে আপনি সেটা ইন্ডিয়াতে পাঠাতে পারবেন না। কারণ সেটা আবার পাঠাতে হলে এক্সপোর্ট এর আওতায় পড়বে। তথ্যসূত্র: ইববাই ডটকম।
No comments:
Post a Comment